অতিরিক্ত কফি খাচ্ছেন? হতে পারে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি?


কফি আমাদের অনেকের জন্য প্রতিদিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সকালে এক কাপ কফি যেন দিন শুরু করার এনার্জি! তবে কফি যতটা উপকারী, অতিরিক্ত পান করলে এর বিপরীত প্রভাবও পড়তে পারে শরীরে। কফি পানে সচেতন না হলে হতে পারে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। আসুন জেনে নেই অতিরিক্ত কফি পানের ক্ষতিকর দিকগুলো।


১. ঘুমের ব্যাঘাত

কফিতে থাকা ক্যাফেইন আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, যা তাৎক্ষণিকভাবে এনার্জি বাড়ালেও বেশি কফি খেলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত কফি পান করলে রাতে দেরিতে ঘুম আসা বা ঘুমের মান খারাপ হয়ে যায়।


২. হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি

ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়ায়, বিশেষ করে যদি আপনি একদিনে ৪-৫ কাপের বেশি কফি খান। উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের কারণ হতে পারে। তাই উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য অতিরিক্ত কফি ক্ষতিকর।


৩. পাচনতন্ত্রের সমস্যা

কফি বেশি খেলে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড বেশি উৎপন্ন হয়, যা অম্বল বা পেটের জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে। খালি পেটে কফি পান করলে এই সমস্যা আরও তীব্র হয়।


৪. আসক্তি ও মানসিক চাপ

ক্যাফেইন একটি মৃদু মাদক। নিয়মিত অতিরিক্ত কফি পান করলে শরীর ক্যাফেইনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারে। ফলে কফি না পেলে মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া এবং মনোযোগের ঘাটতির মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।


৫. ক্যালসিয়ামের ঘাটতি

অতিরিক্ত কফি হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে হাড় দুর্বল করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।


৬. প্রসূতি ও নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি

গর্ভবতী নারীদের জন্য অতিরিক্ত কফি পানে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এছাড়া, এটি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা নারীদের জন্য ক্ষতিকর।


কতটুকু কফি পান নিরাপদ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে ২-৩ কাপ কফি পান নিরাপদ। ৪০০ মিগ্রা ক্যাফেইন, যা প্রায় ৪ কাপ কফির সমান, এর বেশি হলে তা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।

কফি আমাদের কর্মক্ষমতা ও মানসিক সতেজতা বাড়ালেও মাত্রারিক্ত পান করলে এটি শরীরের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই কফি পানের পরিমাণে সংযমী হতে হবে এবং শরীরের সাড়া মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মনে রাখবেন, সুস্থ থাকার জন্য পরিমিত জীবনযাপনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

0 Comments

Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post